ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বাংলার অন্যতম এক কীর্তিমান ব্যক্তি। তিনি একাধারে ভাষাবিদ, ভাষাবিজ্ঞানী, ধ্বনিতত্ত্ববিদ, দার্শনিক ও গবেষক ছিলেন।
১৮৮৫ সালের ১০ জুলাই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার পেয়ারা গ্রামে জন্ম নেন তিনি।
হাওড়া জেলা স্কুল, কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ, কলকাতা সিটি কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।
এছাড়া ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ প্যারিসের সরবন বিশ্ববিদ্যায় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
১৯৩৭ সালে যোগ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হিসাবে। অবসর নেন ১৯৪৪ সালে।
পরবর্তীতে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে। এছাড়াও তিনি কাজ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত ও পালি বিভাগে।
বাংলা ভাষাতত্ত্ব ও ধ্বনিতত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করেছেন। তার গবেষণা গ্রন্থের সংখ্যা ৪০টি।
মুহম্মদ শহীদুল্লাহ এম এ পাশ করার পরই বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য সমিতির সম্পাদক হন। ১৯৪৮ সালে পূর্ব পাকিস্তান সাহিত্য সম্মেলনের সভাপতি ছিলেন।
বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষা করার পক্ষে যে কজন ব্যক্তি জোরালো বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন তাদের মধ্যে ড. শহীদুল্লাহ অন্যতম।
বাংলাদেশের আঞ্চলিক ভাষার অভিধান সম্পাদনা তার জীবনের অন্যতম একটি বড় কাজ। ভাষা ও সাহিত্যের ওপর গবেষণার জন্য তিনি ফরাসি সরকারের দেওয়া ‘নাইট অব দা অর্ডারস অব আর্ট লেটার্স’ উপাধি ছাড়াও নানা পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন।
১৯৬৯ সালের ১৩ জুলাই মুহম্মদ শহীদুল্লাহ মৃত্যুবরণ করেন। ভাষাক্ষেত্রে তার অমর অবদানকে সম্মান ও শ্রদ্ধা জানাতে ওই বছরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালিন ঢাকা হলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় শহীদুল্লাহ হল।
তাকে ওই হলের পাশেই সমাহিত করা হয়।