কয়েক দিন আগের কথা। বন্ধুরা মিলে ক্লাসে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। হঠাৎ করে আড্ডায় অংশ নেন আমাদের শ্রেণি শিক্ষক উম্মে হাবিবা সুমি।
আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ভাইয়া, আপু বলে সমর্থন করা হয়। যখন আমরা তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ি তখন সুমি আপু নালন্দায় আসেন। আমরা সপ্তম শ্রেণিতে উঠে তার ক্লাস পাই। ছোট থেকেই সুমি আপু আমাদের কাছে বন্ধুর মতো। তাই আপুর উপস্থিতিতে আমাদের আড্ডাটা আরও জমে উঠল।
গল্প করতে করতে হঠাৎ আপু বলেন, ‘তোরা একদিন আমার বাসায় বেড়াতে এলে কেমন হয়?’
আপুর কথা শুনে আমরা আনন্দে নেচে উঠলাম এবং সিদ্ধান্ত নিলাম ১৭ তারিখ সোমবার স্কুল থেকে আপুর বাসায় বেড়াতে যাব। যেই বলা সেই কাজ। আমরা সোমবার স্কুল থেকে পায়ে হেঁটে আপুর বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হই।
আপুর বাসা রাজধানীর ধানমণ্ডির নিরিবিলি হাউজিংয়ে। আমাদের স্কুল থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার পথ। সবাই গল্প করতে করতে খুব অল্প সময়েই পৌঁছে গেলাম মনে হলো।
আপুর বাসায় গিয়ে দেখি তিনি আমাদের জন্য রান্না করছেন। আমরাও আপুকে রান্নার কাজে সাহায্যে করি। কাজ শেষ হলে আমরা সুমি আপুর ঘরে গিয়ে বসি। বাসাটা খুব বেশি বড় নয় তবে খুব সুন্দর করে গুছিয়ে রেখেছেন।
কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়ার পরই আমাদের পেটে ইঁদুর দৌড়ান শুরু হলো। আমরা সবাই যার যার মতো করে প্লেটে খাবার তুলে নেই।
আপু ডিম, চিংড়ি মাছ, পোলাও, কাবাবসহ আরো নানা ধরনের খাবার তৈরি করেছিলেন। আপুর রান্না যে এত মজা তা আমরা আগে জানতামই না। আমরা পেট পুরে খেলাম। সবাই মিলে এক সঙ্গে খেতে খুব ভালো লাগল।
দুপুরের খাওয়া দাওয়ার পর আমরা অনেক আড্ডা দিলাম। আড্ডায় আমরা নিজেদের স্কুল, পুরনো স্মৃতি নিয়ে গল্প করলাম।
সুমি আপু বলেন, ‘তোরা কত ছোট ছিলি, তোদেরকে দেখে আমার এখনও বিশ্বাস হয় না যে তোরা আর কয়েক দিন পর এসএসসি পরীক্ষা দিবি ।’
এরপর চলল ছবি তোলার পর্ব। আমরা সবাই মিলে সুমি আপুর বাসার ড্রইংরুমে একটা গ্রুপ ছবি তুললাম।
আপুর সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব অনেক দিনের। আর এক বছর পর আমাদের এসএসসি পরীক্ষা। এরপর স্কুল থেকে চলে যাব। আপুকে আর এভাবে পাব না। কিন্তু তার প্রতি আমাদের ভালোবাসা, শ্রদ্ধা থেকে যাবে চিরকাল।