হ্যালো ও প্রিজমের ঢাকার কজন সাংবাদিক সোনারগাঁও আর পানাম নগর সফরে যাব ঠিক হলো। সেখানে দেখব শিল্পাচার্য জয়নুল লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর আর পানাম নগর।
দিনক্ষণ সব ঠিক হলো। বেরিয়ে পড়লাম ঢাকার নয়জন শিশু সাংবাদিক আর কর্তৃপক্ষের তিনজন, মোট ১২ জন সদস্য।
ডিসেম্বরের ২৫ তারিখ সকালে বন্ধুরা সবাই জড়ো হয়ে এক সঙ্গে রওনা দিয়েছিলাম নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁওয়ের দিকে। বাসে আড্ডা দিতে দিতেই পথ কখন ফুরিয়ে গেল বুঝতে পারিনি।
টিকিট কেটে ঢুকে পড়লাম শিল্পাচার্য জয়নুল লোক ও কারুশিল্প জাদুঘরে। এখানে রয়েছে প্রাচীন বাংলার অনেক নমুনা। খড়ম, অলংকার, পালকি, পানির পাত্রসহ আরও অনেক কিছু। জানলাম অনেক অজানা তথ্য।
চিত্রশিল্পী জয়নুল আবেদীন সোনারগাঁওয়ের ঐতিহাসিক পানাম নগরীর এক পুরনো বাড়িতে ১৯৭৫ সালের ১২ মার্চ প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন। পরবর্তীতে ১৯৮১ সালে তিনি বাংলার প্রকৃতি, গ্রামীণ পরিবেশ আর শিল্পকর্ম তুলে ধরতে ফাউন্ডেশন সংলিষ্ট জাদুঘরটি সবার জন্যে অবারিত করে দেন।
জাদুঘরে রয়েছে কাঠ খোদাই করা কারুশিল্প, প্রাচীনকালের নানা নিদর্শন, মুখোশ, বাদ্যযন্ত্র, তামা-কাঁসা-পিতল-লোহার তৈরি জিনিসপত্র, লোকজ অলংকারসহ অনেক কিছু।
জাদুঘরের বাইরের মনোরম পরিবেশ আমাদের মুগ্ধ করেছে। সেখানে রয়েছে পুরান সর্দার বাড়ি, সর্দার বাড়ির সামনের পুকুর, গাছপালা, বাশেঁর সাঁকো, লেক আর লেকে ঘোরার জন্যে পঙ্খীরাজ নৌকা।
এই সফরের স্মৃতি ধরে রাখতে অনেক ছবি তুলেছিলাম। এরপর আমরা গিয়েছিলাম পানাম নগর। ঘুরে ঘুরে দেখলাম কয়েক শতাব্দী পুরান ভবন, যেগুলো বাংলার বার ভূইয়াঁদের ইতিহাসের সাথে সম্পর্কিত। সংরক্ষণের অভাবে অনেক ভবন এখন ধ্বংসের পথে।
এক সময় সোনারগাঁও ছিল বাংলার রাজধানী। ১৫ শতকে ঈসা খাঁ বাংলার প্রথম রাজধানী স্থাপন করেছিলেন সেখানে। তাই ব্যবসায়ীদের থাকার জন্য দালান তৈরি করেছিলেন এই নগরে।
পানাম নগর দেখা শেষে, আমরা নারায়ণগঞ্জ চৌরাস্তার কলাপাতা রেস্টুরেন্টে দুপুরের খাবার খেয়ে রওনা দিলাম ঢাকা শহরের দিকে।
বন্ধুদের মধ্যে ছিল, নানজীবা খান, পৃথা প্রণোদনা, ইরিত্রা দেবনীল, আজমল তানজীম সাকির, সাদিক ইভান, খন্দকার রবিউল ইসলাম, জুবায়ের হাসান, ওমর ফারুক, শেখ মখদুম আর আমি।