আইরিশ বংশোদ্ভূত সমাজ কর্মী, লেখিকা, শিক্ষিকা ও স্বামী বিবেকানন্দের শিষ্যা সিস্টার নিবেদিতা উপমহাদেশের মানুষের কল্যাণে ও নারী শিক্ষার জন্য কাজ করেছেন।

মেয়েদের লেখাপড়া শেখানোর জন্য নিবেদিতা উত্তর কোলকাতার বগবাজার অঞ্চলে বোসপাড়া লেনে মেয়েদের জন্য একটি স্কুল খোলেন।

তিনি দুর্গত মানুষের সেবায় নিজেকে বিলিয়েছেন। পাশে থেকেছেন সবসময়। বাবা স্যামুয়েল রিচমন্ড নোবেলের কাছে শিখেছিলেন ‘মানব সেবাই ঈশ্বর সেবা।’ তাই আমৃত্যু মানুষের সেবা করে গেছেন।

১৮৬৭ সালের ২৮ অক্টোবর উত্তর আয়ারল্যান্ডের ডেনগ্যানন শহরে জন্ম নেয়া সিসটার নিবেদিতার পুরো নাম মারগারেট এলিজাবেদ নোবেল। তিনি ছিলেন একজন শিক্ষিকা। শিক্ষকতা করার সময় তার পরিচয় হয় স্বামী বিবেকানন্দের সাথে। বিবেকানন্দের বাণী তার জীবনে গভীর প্রভাব ফেলে। তিনি ভারতকে কাজের জায়গা হিসেবে বেছে নেন। নিবেদিতাই পাশ্চাত্যের প্রথম নারী যিনি ভারতীয় সন্ন্যাসিনীর ব্রত নিয়েছিলেন। বিবেকানন্দ তার নাম দিয়েছিলেন নিবেদিতা।

১৮৯৯ সালে কোলকাতায় ‘প্লেগ মহামারি’ দেখা দিলে তিনি স্থানীয় যুবকদের সহায়তায় রোগীদের সেবা ও পল্লী পরিস্কারের কাজ করেন।

এছাড়া ১৯০৫ সালে ‘বঙ্গভঙ্গ বিরোধী’ আন্দোলনে গোপনে তিনি বিপ্লবীদের সাহায্য করেন। তখন অরবিন্দ ঘোষ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জগদিস চন্দ্র বসুসহ আরও অনেকের সঙ্গে তার পরিচয় ও বন্ধুত্ব হয়।

তার লেখার হাত ছিল চমৎকার। তিনি ভারত নিয়ে ‘দ্যা ওয়েব অফ ইন্ডিয়ান’ নামে একটি বই লিখেছিলেন। এটি বেশ আলোচিত ছিল।

ভারতীয় আবহাওয়ায় অতিরিক্ত পরিশ্রমের ফলে তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। ১৯১১ সালের ১৩ অক্টোবর মাত্র ৪৪ বছর বয়সে তিনি ভারতেই মারা যান।