কথায় আছে,‘বন্ধু ছাড়া লাইফ ইমপসিবল।’ আমিও কথাটি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি। কারণ আমার জীবনের একটা মুহূর্তও বন্ধুদের ছাড়া পার করিনি। জীবনের দুঃখ, কষ্ট, হাসি, কান্না প্রতিটি সময় বন্ধুরা আমার পাশে ছিল ।

আমার বয়স যখন তিন বছর তখন আমি নালন্দা বিদ্যালয়ে ভর্তি হই। সাধারণত কেউ ভর্তি হওয়ার সাথে সাথে বন্ধু পায় না। তবে আমি পেয়েছিলাম। নালন্দায় ভর্তি হওয়ার পর আমি প্রায় ৩০ জন বন্ধুকে কাছে পেয়েছিলাম। সেই তিন বছর বয়স থেকে এখন পর্যন্ত আমার এই বন্ধুরা আমার সাথে রয়েছে ।

আমি বর্তমানে নালন্দা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে পড়ছি। সুতরাং, আমাদের ৩০ জনের এই বন্ধুত্বটা প্রায় তের বছরের। আমার এখন ইচ্ছা করে আবার ছোট হয়ে যেতে। এর কারণ হলো যখন ভাবি যে, আর মাত্র এক বছর পরে ছেড়ে চলে যেতে হবে নালন্দাকে, ছেড়ে চলে যেতে হবে এই ছোটবেলার বন্ধুগুলোকে, তখন বুকের ভেতরে কেমন যেন লেগে ওঠে! শুধু মনের মধ্যে প্রশ্ন জাগে কীভাবে পারব ওদেরকে ছাড়া থাকতে!

আমাদের নালন্দার সবচেয়ে মজার জিনিস হলো আমরা ছোটবেলা থেকেই স্কুলে কোনো অনুষ্ঠান হলে, ছেলেরা পাঞ্জাবি এবং মেয়েরা শাড়ি পড়ি। এখন ভাবতেই কষ্ট হয় আর এক বছর পর আর এই মজাগুলো উপভোগ করতে পারব না, প্রতি দিনের মতো আর এই বন্ধুগুলোর সাথে দেখা হবে না, প্রতিদিনের মতো আর আড্ডা, হাসাহাসি, মারামারি করা হবে না এই বন্ধুদের সাথে। এগুলো ভাবতেই চোখের কোণে জল চলে আসে।

আমরা ৩০ জন বন্ধু যে এই তের বছরে নালন্দায় কত দুষ্টুমি করেছি এবং ক্লাসে টিচারদের কতো জ্বালিয়েছি তা বলে শেষ করা যাবে না।

হয়তো আর এক বছর পর আমাদের আর আগের মতো দেখা হবে না, কথা হবে না। কিন্তু নালন্দার এসব পুরনো স্মৃতিগুলো সাক্ষি হয়ে থাকবে আমাদের এতো বছরের বন্ধুত্বের।