কয়েকদিন আগের কথা। তখন আমার স্কুলে টেস্ট পরীক্ষা চলছে। অর্থাৎ, পড়াশোনার বেড়াজালে বন্দি আমি। এই পরীক্ষার মধ্যেও যাদের কথা আমার বারবার মনে পড়ত, সেটা হলো ‘হ্যালো পরিবার।’
হ্যালোতে লেখা দেওয়া, হ্যালোর বন্ধুদের সাথে আড্ডা আর আপুদের কথাগুলো খুব মিস করছিলাম সেই সময়। তবুও পড়ার ফাঁকে সুযোগ পেলেই বসে যেতাম হ্যালোর বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে।
সেদিন ছিল মঙ্গলবার। হঠাৎ মায়ের ফোনে হ্যালো ডেস্ক থেকে ফোন এলো। ডেস্কের ফোন দেখে মা আমাকে ফোনটা দিয়ে দিলেন।

ফ্যামিলি ডে family day

ফ্যামিলি ডে

ফোনটা ধরতেই আমার পরীক্ষার খোঁজ নেওয়া হলো। তারপর জানানো হলো বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর এর এগারো বছর পূর্তি উপলক্ষে অফিসে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে আমিসহ আটজন শিশু সাংবাদিককে আমন্ত্রণ করা হয়েছে।
নিমন্ত্রণ পেয়ে আমি তো আনন্দে আত্মহারা। ফোন রেখেই এক লাফে পড়ার টেবিলে গিয়ে বসলাম। মনে মনে ভাবলাম অনুষ্ঠানে যেতে হলে আমাকে তো পড়াটা শেষ করতে হবে। অনুষ্ঠানের পর দিনই ছিল আমার উচ্চতর গণিত পরীক্ষা।
নিজে নিজে শপথ নিলাম যে শনিবার সকালের মধ্যে পরীক্ষার পড়া শেষ করব এবং রাতে অফিসে যাব। আমার পড়াশোনার প্রতি মনোযোগ দেখে পরিবারের সবাই অবাক! মা অবশ্য বিস্ময় প্রকাশ করলেন না। সেটা আমি মার চেহারা দেখেই বুঝে গিয়েছিলাম।
এরপর মাকে আমি আমার এই পড়াশোনায় মনোযোগের কারণটা দ্রুতই জানিয়ে দেই। মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করায় মা আমাকে যেতে বাধা দেননি। শনিবার সকালের মধ্যে পরীক্ষার পড়াশোনা গুছিয়ে নিয়ে রাতে অনুষ্ঠানে যোগ দেই।
দিনটি ছিল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ‘ফ্যামেলি ডে’। মানে একাদশ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী।

ফ্যামিলি ডে family day

ফ্যামিলি ডে

হৃদয় ভাইয়া, সাকির, আরিয়ান ভাইয়া, ওমর ফারুক, সাদিক ইভান, সিনদিদ ও নানজীবা আর আমি, মোট আটজন শিশু সাংবাদিক এই অনুষ্ঠানে অংশ নেই।
এই সন্ধ্যা ছিল আমাদের জন্য খুব আনন্দের। কারণ এ দিন আমরা বাংলাদেশের একাত্তরের বন্ধু, জুলিয়ান ফ্রান্সিসের সঙ্গে দেখা হয়। এসময় আরও অনেক রাজনীতিবিদ, অভিনেতা, সঙ্গীত শিল্পী, চিত্র পরিচালকের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয় আমাদের।
অনুষ্ঠানে গান, বিচিত্র সব দেশীয় খাবার, ফল, রাতের খাবার শেষে উপহারও পেলাম! একেকজন পেয়েছি একেক ধরনের বই। বইগুলো রঙিন কাগজে মোড়ানো ছিল। তাই আমরা একজন আরেকজনের উপহার দেখতে পারিনি। বাসায় এসে রঙিন মোড়ক খোলার পরে তিনটি বই পাই। এগুলো হলো, লেখক রকিব হাসানের লেখা আরব্য রজনীর গল্প (প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড) এবং হোমারের লেখা বিখ্যাত বই, ওডেসি!

লেখাটি প্রকাশিত হয়েছে হ্যালোডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে, প্রকাশকাল: ২৩ নভেম্বর ২০১৭