মার কাছে গল্প শুনি, ছোটবেলায় তারা স্কুলছুটির পর বন্ধুরা মিলে খেলতে যেতেন মাঠে। খেলতেন, গোল্লাছুট, বৌ-ছি, রুমাল চুরির মতো মজাদার সব খেলা। ফড়িং আর প্রজাপতির পেছনে ছুটতেন মাঠজুড়ে।

আর আমরা ঘরে বসে টেলিভিশন দেখি বা মোবাইলে গেইম খেলি। বড় জোর বাবা মার চোখ এড়িয়ে ফেইসবুকে ঢুঁ দেই।

এখন যুগ পাল্টেছে। প্রযুক্তি আমাদের পৌঁছে দিয়েছে সভ্যতার শিখরে। নাগরিক জীবনে এখন বোতাম বা সুইচ টিপলেই প্রযুক্তির দৈত্য আমাদের নাগালে পৌঁছে দেয় সব কিছু। তবু আমি মার মতো শৈশবকে খুব পেতে চাই।

বৈদ্যুতিক পাখা, আলো, ফ্রিজ, ওভেন, লিফট, টেলিভিশন, মোবাইল ফোন ছাড়া জীবনের কথা এখন আমরা ভাবতেই পারি না। কিন্তু সেই সাথে হাতপাখা, লণ্ঠনের আলো, লাকড়ির চুলার রান্না আর দল বেঁধে মাঠে খেলার আনন্দ আমাদের নাগালে নেই বলেও যেন কষ্ট পাই।

বাড়িতে আমরা দু’বোন আর মা। বাবা থকেন শুধু ছুটির দিনগুলোয়। স্কুল আর বাড়ি এভাবেই আমরা শৈশব, কৈশোর পার হয়ে আসছি। মাঝে মাঝে খুব একলা লাগে। স্কুল থেকে দেয়া বাড়ির কাজ করার বাইরে কখনো গল্পের বই আর সেই টেলিভিশন। সময় কাটতে চায় না। আর টেলিভিশনেও আমাদের জন্য তেমন কিছুই থাকে না।

বিপদের ভয়ে মা বাইরেও যেতে দিতে চান না। আর খেলতে যাবার জন্য বাড়ির পাশে মাঠও তো নাই। নাই কোন পাঠাগার।

শেষ পর্যন্ত মোবাইলে গেইম আর ফেইসবুক। আর বড় লোকের ছেলে মেয়ের হাতে হাতে ট্যাব, কানে ইয়ারফোন।

কেউ কারও সাথে কথা বলে না। কানে ফোন গুঁজে ফোন বা ট্যাবের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে আধুনিক শহুরে জীবনের শিশুরা একদিন বড় হয়ে যায়।

প্রযুক্তি আমাদের দিয়েছে অনেক কিন্তু নিয়েছেও বড় কম নয়! আমরা স্বার্থপর হয়ে বেড়ে উঠছি না কি? এ সব নিয়ে ভাবছেন নিশ্চয় কেউ না কেউ।