জানুয়ারি মাসে পড়াশোনা মাত্র শুরু হয়েছে। তখন আমাদের খাগড়াছড়ি যাওয়ার পরিকল্পনা চলছে।

বাবার মুখে শুনলাম এবার আমরা যাব, সুন্দর আর সবুজ পাহাড়ে ঘেরা পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি।  

শুনেছি বেড়ানোর জন্য খাগড়াছড়ি খুবই অসাধারণ একটি জায়গা। তবে ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি যাবার পথ খুব কষ্টকর। তবে মন ভালো হয়ে যায় যখন রাস্তার দুপাশে চোখে পড়ে পাহাড়।

পাহাড়গুলো যেন মাথা উঁচু করে আমাদের ডাকছে।

খাগাড়ছড়ির কংলাক পাড়ায় ‘সাজেক’ পাহাড়ে উঠবার পরিকল্পনা নিয়ে সাজেকে হাজির হলাম।

সাজেক পাহাড়টি প্রায় ২,২০০ ফিট উঁচু। এর জন্যই জায়গাটি বিখ্যাত। এই পাহাড়টির নামেই জায়গাটির নাম ‘সাজেক’।

এখানে বাস করে নানা সম্প্রদায়ের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষ। ত্রিপুরা, চাকমা, মারমাসহ নানা সম্প্রদায়।

এদের একটি অন্যতম খাবারের নাম হল ব্যাম্বু চিকেন বা বাঁশ মুরগি।

এটি স্থানীয়দের ঐতিহ্যবাহী খাবার।

তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল এই খাবার প্রচলনের গল্প।

যখন থেকে জুম চাষ শুরু হয়েছে, এই খাবারটির প্রচলন শুরু হয় তখন থেকেই বলে জানা গেছে। জুম চাষ খুব কষ্টের। কারণ পাহাড় কেটে ধাপে ধাপে বিভিন্ন ফসল ফলাতে হয়।

এটি খুব কষ্টের ও সময় সাপেক্ষ। অনেক সময় চাষ করতে গিয়ে তাদের দিনের পুরোটা সময় পাহাড়ে কেটে যায়। তখন খাবার হিসেবে তারা বাঁশ মুরগি রান্না করত। সেই তখন থেকেই নাকি খাবারটির প্রচলন।

খাবারটি খেতে আমার খুব মজা লাগায় তাদের কাছে আমি বাঁশ মুরগি রান্নার প্রণালীটা জেনে এসেছি।  

এ রান্নার জন্য মুরগি ও কচি বাশেঁর দরকার হয়। মুরগিগুলোকে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে মশলা মিশিয়ে কলা পাতায় মুড়ে কচি বাঁশের মধ্যে পুরে আগুনে পোড়াতে হয়।  

স্থানীয়দের ধারণা, বাঁশ মুরগি রান্নার সময় যদি বাঁশটা ফেটে যায় তবে অকল্যাণ হয়।

আমরা ‘জলবুক’ কটেজে উঠেছিলাম। এখানে সব খাবারই স্থানীয়দের তদারকিতে রান্না হয়। সেই সূত্রে আমাদের কয়েক রকম নতুন খাবার খাওয়ার অভিজ্ঞতা হয়েছে।