শীত এলেই প্রকৃতির রূপ পাল্টে যায়। কুয়াশার চাদরে ঢেকে যায় সবকিছু। এসময় গাঁয়ের সৌন্দর্য বেড়ে যায় বহু গুণে।

গ্রামের প্রধান আকর্ষণ হয়তো হলদে সর্ষে ফুলের চাদর। মাঠের পর মাঠ, গ্রামের পর গ্রাম ভরে উঠে হলদে সর্ষে ফুল দিয়ে।

শীতে খেজুরের রস খাওয়া আর সর্ষে খেতে ঘুরে বেরানোর মজাই অন্যরকম। বার্ষিক পরীক্ষা শেষ। অবসর সময়।

আমাদের নিমন্ত্রণ পড়ে মানিকগঞ্জে, ফুপুর বাড়িতে। গ্রামের নাম হিজুলিয়া। এই গ্রামে ঢুকতেই মন কারে প্রকৃতির অপরূপ দৃশ্য। গ্রামের মেঠো পথ। দুই ধারে যতদূর চোখ যায় হলুদ রঙের সর্ষে ক্ষেত। যেন হলুদ কার্পেটে মোড়ানো।

সরিষা ক্ষেতে পা রাখতেই শোনা যায় অগণিত মৌমাছি ডাকছে। তারা আসলে ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করছে। চারদিকের শব্দে যখন হাঁটছি তখন মনে হয় আমিও মৌমাছি হয়ে গেছি।

আমরা ঘুরে বেড়াই ক্ষেতে, ফড়িং ধরি, মৌমাছির উড়াউড়ি দেখি আর ক্ষেতের পাশে গ্রাম্য শিশুদের খেলা দেখি। হলুদ ক্ষেতের মধ্যে দিয়ে যখন দুই একটা সাদা বক উড়ে যায় দেখতে অসাধারণ লাগে।

পায়ের তলে সর্ষে মেখে আমরা একটি ছোট্ট মাঠে এসে অবাক হই। ছোট ছোট বিশেষ রকমের কয়েকশ বাক্স বসিয়ে বসে আছে দুজন লোক। তাদের মুখ জালের কাপড়ে ঢাকা।

কথা বলে জানলাম তারা মধু সংগ্রহ করে। সর্ষে ফুল থেকে মধু এনে বাক্সে এসে চাক বাঁধে শত শত মৌমাছি। এই মধু সংগ্রহকারীরা বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসেছে। সর্ষে ফুলের মধু সংগ্রহের পর তারা চলে যাবে অন্য অঞ্চলে অন্য কোন ফুলের মধু সংগ্রহে। এই মধু সংগ্রহের আয়োজন আমাদের বেশ অবাক করে। আমি ও আমার বোন আদিবা মনের আনন্দে দুদিন ঘুরে বেড়াই খুব আনন্দে।