কয়েকদিন আগের কথা। বাবার সঙ্গে শাহবাগ যাচ্ছিলাম। উদ্দেশ্য ছিল বই কিনব।

বাড়ি থেকে অটোরিকশায় বিজয় স্মরণী আসতেই ট্রাফিক সিগন্যালে রিকশা থামল। সিগন্যালে বসে থাকতে হলো ১০ মিনিট। আমাদের অটোরিকশার পাশে খুব দামি ও চকচকে একটা মোটর কার দাঁড়িয়ে ছিল। তার জানালা দিয়ে দেখতে পেলাম ভেতরের যাত্রীরা বেশ হাসাহাসি ও মজা করছেন। কোনো মানুষকে খুশি দেখলে আমার বেশ আনন্দ হয়। তাদের দিকেও আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকলাম।

কিছুক্ষণ পর দেখলাম একজন বৃদ্ধ লোক হেঁটে আসছেন গাড়িটির দিকে। তিনি জানালার গ্লাসে টোকা দিলেন। কিন্তু যাত্রীদের কেউই তার দিকে তাকালেন না। তিনি কয়েক বার চেষ্টার পরও কেউই তাকিয়ে দেখলেন না। তারপর তিনি আমাদের কাছে এলেন। তিনি কিছু সাহায্য চান। বাবা তাকে ১০ টাকার একটি নোট দিলেন। ওনার মুখ দেখে মনে হল, বেশ খুশি হয়েছেন। তার খুশি মুখটা দেখে আমার বেশ ভালো লাগল। তাকে আরেকটু খুশি করার জন্য বললাম, চাচা আপনার পাঞ্জাবিটা তো বেশ সুন্দর।       

আমার কথা শুনে তিনি হেসে ফেললেন। আমাদের সিগন্যাল ছেড়ে দিলে গাড়ি চলতে শুরু করল।

নিঃসন্দেহে ভিক্ষা করা খারাপ। কিন্তু এতো বৃদ্ধ মানুষটার খাওয়া পরার বা দেখভাল করার হয়তো কেউ নেই। তাই তিনি এ কাজ করেন। কিন্তু যাদের সামর্থ্য আছে তারা যদি একটু এগিয়ে আসেন তাহলেও কি ভিক্ষাবৃত্তি টিকে থাকবে? এর সমাধান হবে না?

সবাই সবাইকে সাহায্য করলে সবাই আনন্দে থাকবে, খুশিতে থাকবে এটা তো আমরা সবাই বুঝি। তবু কেন এ ভেদাভেদ রয়ে যায়? কেন আমরা ‘ভিক্ষা করা খারাপ’ বলেই এই সমস্যাটি এড়িয়ে যাই?