বাঙালি বিপ্লবী নারী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র আন্দোলনে অংশ নেন। তার ডাকনাম রাণী, ছদ্মনাম ছিল ফুলতার।

তিনি ১৯১১ সালের ৫ মে চট্টগ্রামের ধলঘাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। আদর করে মা প্রতিভাদেবী তাকে ‘রাণী’ বলে ডাকতেন।

লেখাপড়ায় প্রচণ্ড মেধাবী প্রীতিলতা ১৯২৬ সালে সংস্কৃতকলাপ পরীক্ষায় বৃত্তি এবং ১৯২৮ সালে কয়েকটি বিষয়ে লেটার মার্কসসহ প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাশ করেন। আইএ পড়ার জন্য তিনি ঢাকা এসে ইডেন কলেজে ভর্তি হন এবং ১৯৩০ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় তিনি মেয়েদের মধ্যে প্রথম এবং সবার মধ্যে পঞ্চম স্থান লাভ করেন। ১৯৩২ সালে ডিসটিংশান নিয়ে তিনি বিএ পাশ করেন।

ঢাকায় পড়তে এসে প্রীতিলতা ‘শ্রীসংঘ’ নামে একটি বিপ্লবী সংগঠনে যোগ দিয়ে লাঠিখেলা, ছোরাখেলাসহ নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেন।

ব্রিটিশ বিরোধী আন্দলনে প্রীতিলতা কাজ করতেন বিপ্লবী মাস্টার দা সূর্য সেনের সাথে।

মাষ্টারদা ১৯৩২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ইংরেজদের পাহাড়তলী ইউরোপীয়ান ক্লাব আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন। এই আক্রমণের দায়ভার ছিল আরেক বিপ্লবী নারী কল্পনা দত্তের হাতে। ঘটনার সাতদিন আগেই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যান তিনি। এরপর আক্রমণের ভার এসে পড়ে প্রীতিলতার ওপর।

২৪ সেপ্টেম্বর ওই ক্লাব আক্রমণের সময় প্রীতিলতা ছদ্মবেশ নেন। রাত আনুমানিক ১০টা ৪৫ এর দিকে ক্লাবে আক্রমণ করা হয়।

তিন ভাগে ভাগ হয়ে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে বিপ্লবীরা ক্লাব আক্রমণ করেন।

ক্লাবে কয়েকজন ইংরেজ অফিসারের কাছে রিভলবার ছিল। মিলিটারিরা পাল্টা আক্রমণ করলেও তারা সফল হন। তবে ফেরার পথে প্রীতিলতার বাম পায়ে গুলি লাগে। তিনি ইংরেজ মিলিটারিদের হাতে ধরা পড়ার ভয়ে আগের সিদ্ধান্ত মতো পটাসিয়াম সায়ানাইড খেয়ে আত্মহত্যা করেন।  

প্রীতিলতা আমাদের জন্য আত্মত্যাগের শিক্ষা দেয়। প্রীতিলতার জন্মদিনে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি তাকে।